দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশের নির্বাচন সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি জনগণের ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মুনিরুজ্জামান মুনিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নলছিটি হাসপাতাল সড়কের (বাইপাস মোড়) বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে নলছিটি থানা পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া মুনির ওই এলাকার মৃত আ. খালেক জোমাদ্দারের ছেলে এবং দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নলছিটি উপজেলা প্রতিনিধি। তার বিরুদ্ধে বরিশাল কোতয়ালি ও নলছিটি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নলছিটি থানায় মামলাটি করেন উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মাসুদুর রহমান (ছালাম)।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, রানাপাশা ইউনিয়নের পরপর দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানকে ইচ্ছাকৃত এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডিজিটাল বিন্যাসে অপমান-অপদস্থ ও হেয়প্রতিপন্ন করা, মানহানি ঘটানো এবং জনপ্রতিনিধিদের প্রতি ঘৃনা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন, পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসন সম্পর্কে বিভ্রান্তি, এলাকায় অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিপ্রায়ে একাধিক মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য সাজিয়ে একটি লাইভ ভিডিও বানিয়ে আসামী মুনিরুজ্জামান মুনির নিজ আইডি ‘‘মাসুদুজ্জামান মিতুল (https://www.facebook.com/profile.php?id=100021983172803)’’ দিয়ে গত ২৪ মে রাত ৯টা ৪৯ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ ও প্রচার করে।
১৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে বিনাভোটের চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান হতে ভোটে লাগে না, জনপ্রতিনিধি নামে নরপশু, পুলিশ ন্যায় বিচার করেনি, সকল ইউনিয়ন ও পৌরসভায় অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে, প্রশাসনে জবাবদিহিতা কোথায়?সহ আরো কিছু উস্কানীমুলক বক্তব্য প্রকাশ করে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ওই চেয়ারম্যান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ছালামের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মুনিরুজ্জামান মুনিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ শনিবার (৩০ মে) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নলছিটি থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল নলছিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে চাঁদা দাবি, হুমকি ও সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগে মুনিরের নামে নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফারুক আলম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩০ অক্টোবর চাঁদা দাবির ঘটনায় নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া গ্রামের সবুজ হাওলাদার বাদী হয়ে নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট বরিশাল নগরীর সাগরদী এলাকা থেকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এছাড়াও মুনিরের বিরুদ্ধে বরিশাল কোতয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চাঁদা দাবির ঘটনায় মানিক ওঝা নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মুনিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। বরিশালে থানায় ঢুকে অস্ত্রাগার ও ব্যারাকসহ বিভিন্ন কক্ষে গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও করায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কোতয়ালি থানায় দায়ের হওয়া আরেকটি মামলারও আসামী এই মুনির। বরিশাল কোতয়ালি থানা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
Leave a Reply